বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারত সরকার সরাসরি কিভাবে একটি অগণতান্ত্রিক মনস্টার স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়? তারা মুখে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আছে বললেও তারা ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা অতীব দুঃখজনক।
শুক্রবার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গোটা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের ভোটাধিকার বঞ্চিত, গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে সরব তখন গত ১৫ বছর ধরে বিনা ভোটে বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতা দখল করে থাকা শেখ হাসিনার পক্ষে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। রাশিয়া-চীনে তো গণতন্ত্র নেই। আমাদের কাছের প্রতিবেশী ভারত, যে রাষ্ট্রটি গণতান্ত্রিক। যেখানে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য আছে। সেই ভারত সরকার সরাসরি কিভাবে একটি অগণতান্ত্রিক মনস্টার স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়? তারা মুখে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আছে বললেও তারা ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা অতীব দুঃখজনক। এই ভারতের সমর্থন শক্তিতে আওয়ামী লীগ লুটেরা লীগ দেশটাকে গিলে ফেলেছে। ১৫টা বছর ধরে কেউ ভোট দিতে পারছেনা- লক্ষ মানুষ কারাবন্দি- কোটি কোটি মানুষ ঘরে থাকতে পারে না- প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন ডলার লুটে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, খ্যাতিমান দ্য ডিপ্লোমেটের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্র এবং বৈচিত্র্যময় মর্যাদা তুলে ধরেছিলেন, এমনকি নিজের দেশকে ‘গণতন্ত্রের জননী’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
কিন্তু ভারতের পূর্বের প্রতিবেশী বাংলাদেশে মোদি সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসনকে সমর্থন করছে। ভারত বাংলাদেশে নিজের ফেবারিট নিয়ে খেলেছে এবং কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে তার ফেবারিট হলো আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ভারতের দৃঢ় সমর্থন দলটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে এবং মানবাধিকার কর্মীদের (দায়মুক্তিসহ কঠোর) আইনের অধীনে জেলে নিতে উৎসাহিত করেছে। যে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে সেগুলোকে আওয়ামী লীগ ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, অগণতান্ত্রিক কার্যকারিতা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ভারতীয় সমর্থন বিস্ময়কর এবং বেমানান।
রিজভী বলেন, ভারতের সরকার বাংলাদেশের জনগণকে তার প্রতিপক্ষ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ভারতের জনগণকে বন্ধুসুলভ বলে মনে করে। কর্তৃত্ববাদী দেশ রাশিয়া শেখ হাসিনাকে সমর্থন করতে পারে। কারণ রাশিয়াতে কোন গণতন্ত্রের ছিটেফুটোও নেই। কিন্তু ভারতের সরকার বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সমর্থন করাটা গভীর রহস্যজনক এবং সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি ভারতের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আপনি বাংলাদেশে জনগণের বন্ধু হতে পারবেন না।
0 Comments